728x90 AdSpace

  • সর্বশেষ

    প্রযুক্তি থেকে সন্তানদের কেন দূরে রেখেছিলেন স্টিভ জবস ও বিল গেটস?

    স্টিভ জবস ও বিল গেটস

    শিশু-কিশোরদের মাঝে প্রযুক্তির অত্যাধিক ব্যবহার প্রবণতা কতটা ক্ষতিকর, তা নিয়ে প্রতিনিয়তই চলছে গবেষণা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, অষ্টম গ্রেডে পড়ুয়া যেসব টিনএজার অতিমাত্রায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে, তাদের মধ্যে হতাশা বাড়তে থাকে এবং অন্য সময়ের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি হতাশ থাকে তারা।

    এছাড়া যেসব শিশু-কিশোর দিনে তিন ঘণ্টার বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, তাদের জন্য বিষয়টি ভয়ংকর রকমের ক্ষতির কারণ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিনএজারদের আত্মহত্যার পরিমাণ অন্যান্য হত্যাকাণ্ডকেও ছাড়িয় গেছে। আর এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে স্মার্টফোনকেই দায়ী করছেন মনোবিজ্ঞানীরা।

    প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তি পণ্য মানুষের মাঝে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে বিশ্বে কিংবদন্তী হয়ে আছেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। সারা বিশ্বের মানুষের মাঝে বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য ছড়িয়ে দিলেও নিজের পরিবারের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা ছিল একেবারেই উল্টো। উঠতি বয়সে তাদের সন্তানরা যেন খুব বেশি প্রযুক্তির সংস্পর্শে আসতে না পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন প্রযুক্তি বিশ্বের এই দুই দিকপাল।

    বিল গেটস পরিবার

    বিল গেটস শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটাতে সবসময়ই কাজ করেছেন। একবার তিনি দেখলেন তার মেয়ে জেনিফার ক্যাথেরিন কম্পিউটারে বেশ আসক্ত হয়ে পড়েছে। ওই কম্পিউটার ঘেঁটে দেখা গেল, তাতে বেশ কিছু গেম রয়েছে, যার পেছনে জেনিফার কাটিয়ে দিচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এর মধ্যে ভিভা পিনাটা নামের একটি গেম খেলেই সে কাটিয়ে দিতো দুই থেকে তিন ঘণ্টা।

    এমন পরিস্থিতিতে মেয়ের কম্পিউটার ব্যবহার দিনে ৪৫ মিনিটে নামিয়ে আনলেন গেটস ও তার স্ত্রী। শুধুই থেমে থাকেননি তিনি। ১৪ বছর বয়সের আগে সন্তানদের মোবাইল ফোন ব্যবহারেও ছিল তার নিষেধাজ্ঞা। যদিও তাতে সন্তানদের ছিল ঘোর আপত্তি।

    এক সাক্ষাতকারে বিল গেটস বলেন: আমরা প্রায়ই তাদের একটি সময় বেধে দিতাম যার পরে সব ডিভাইস বন্ধ করে ফেলতে হবে। এর ফলে তারা সময়মতো ঘুমাতে যেতে পারত এবং পর্যাপ্ত ঘুমানোর সময় পেত।
    স্টিভ জবসও তার সন্তানদের প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে একেবারেই দূরে রেখেছিলেন। ২০১১ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান: তার সন্তানদের জন্য আইপ্যাড ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। শুধু তাই নয়, অন্যান্য প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবহারও ছিল অনেক সীমিত। এর পরিবর্তে তিনি তাদের নিয়মিত সময় দিতেন। একসাথে রাতের খাবার খেতেন এবং প্রযুক্তির বাইরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করতেন।

    তবে শুধু বিল গেটস বা স্টিভ জবসই নন, সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের নামকরা সব ব্যক্তিদের মাঝেই এই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।

    কিন্তু কেন?
    অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের জন্য যারা সারা জীবন কাজ করলেন, তারা নিজেদের সন্তানদের কেন প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখছেন। এ প্রসঙ্গে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে শিক্ষাবিদ জো ক্লিমেন্ট এবং ম্যাট মাইলসের বই ‘স্ক্রিন স্কুলড: টু ভেটেরান টিচার্স এক্সপোজ হাও টেকনোলজি ওভারইউজ ইজ মেকিং আওয়ার কিডস ডাম্বার’ বইতে।

    বইটিতে বলা হয়, সিলিকন ভ্যালির ধনকুবেররা বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্যের আসক্তির ভয়াবহতা সাধারণ মানুষের তুলনায় একটু বেশিই অনুধাবন করতে পারেন। আর তাই নিজেদের সন্তানদের আসক্তি থেকে দূরে রেখে তাদের মধ্যে সৃজনশীলতা বিকাশে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তারা।

    যদিও বর্তমানে দেশটির অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার অংশ হিসেবেই প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেখানে এমন কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও কিন্তু আছে যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহার সর্বনিম্ন। এমনই একটি স্কুল হলো ওয়ালডর্ফ স্কুল। স্কুলটিতে এখনও ক্লাসরুমে চক ও ব্ল্যাকবোর্ড ব্যবহার করা হয়। লেখার জন্য এখানে শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে পেন্সিল। কোডিং শেখানোর পরিবর্তে তাদের শেখানো হয় কীভাবে অন্যকে সম্মান করতে হয় এবং সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করতে হয়।

    এমন আরও একটি স্কুল হলো ব্রাইটওয়ার্কস স্কুল। এখানে শিশুদের সৃজনশীলতা বিকাশে হাতে কলমে বিভিন্ন কিছু বানানো শেখায় শিক্ষকরা। দেয়ালে ঘেরা ক্লাসরুমের পরিবর্তে তাদের ক্লাস নেওয়া হয় ট্রিহাউজে।

    মজার বিষয় হলো এসব স্কুলে নিজেদের সন্তানদের ভর্তি করানোর ক্ষেত্রে ক্রমেই আগ্রহী হচ্ছেন সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা।

     সূত্রঃ চ্যানেল আই অনলাইন
    • Blogger Comments
    • Facebook Comments

    0 মন্তব্য(গুলি):

    Item Reviewed: প্রযুক্তি থেকে সন্তানদের কেন দূরে রেখেছিলেন স্টিভ জবস ও বিল গেটস? Rating: 5 Reviewed By: MASUM MIA
    Scroll to Top