কণ্ঠস্বরে প্রকাশ পায় যে কোনো মানুষের ব্যক্তিত্ব। অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ
করা, নিজের প্রয়োজনের কথা জানানোর জন্য কণ্ঠস্বরের বিরাট ভূমিকা। গায়ক,
শিক্ষক, ডাক্তার, উকিল, নার্স, বিক্রয়কর্মী এবং রাজনৈতিক বক্তারা তাদের
কণ্ঠস্বরকে সারাক্ষণই ব্যবহার করতে চান। কিন্তু এটা করতে গিয়ে তারা
কণ্ঠস্বরের সমস্যায় পড়েন। বিভিন্ন কারণে কণ্ঠস্বরের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যেমন-ঊর্ধ্ব শ্বাসনালীর সংক্রামণ, কণ্ঠস্বরের অন্যান্য ব্যবহার,
স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার, নিউরোমাসকুলার সমস্যা, এমনকি মানসিক আঘাত। গলার
স্বর ফ্যাসফেসে হয়ে গেলে, বিশেষ কোনো উঁচু স্কেলে গান গাইতে কষ্ট হলে, হঠাৎ
কণ্ঠস্বর বসে গেলে, গলা ব্যথা করলে বা কথা বলতে কষ্ট হলে, বারবার গলা
পরিষ্কার করার প্রয়োজন হলে বুঝতে হবে, ভালো নেই কণ্ঠ স্বাস্থ্য।
কণ্ঠস্বর ভালো রাখার কৌশল :
* খেতে হবে প্রচুর পানি। দিনে অন্তত ছয় থেকে আট গ্লাস।
* ধূমপানের অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে হবে। ধূমপায়ীদের মধ্যে স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার রোগের হার অনেক বেশি।
* কথা বলার সময় বুকের ডায়োফ্রামের মাংসপেশির সাহায্য নিতে হবে। ফুসফুস তার হাওয়ার চালানো দিয়ে কথা তৈরিতে যেন সহায়তা করে। অন্যথায় স্বরযন্ত্রের ওপর পড়ে যায় বাড়তি চাপ।
* ঝাল খাওয়া বর্জন করতে হবে। ঝাল থেকে বেড়ে যায় পাকস্থলির এসিড। আর তা উঠে আসতে পারে খাদ্যনালী বেয়ে, যাকে বলা হয় রিফ্ল্যাঙ্।
* ঘরের ভেতর আর্দ্রতা যেন শতকরা তিরিশের মতো থাকে- দরকার হলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা উচিত।
* আপনার খাদ্য তালিকা সাজান বেশি বেশি করে ফলমুল আর শাক-সবজি দিয়ে। এ সবের মধ্যে পাওয়া যাবে ভিটামিন এ, ই, আর সি। কণ্ঠযন্ত্রেও আবরক ঝিলি্লকে সুস্থ রাখতে দরকার এসব ভিটামিন।
* ঘাড়ে রিসিভার নিয়ে দীর্ঘসময় কথা না বলা ভালো। গলার মাংসপেশিতে ব্যথা হতে পারে।
* নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করুন। ব্যায়াম আপনার কর্মশক্তি যেমন বৃদ্ধি করে, তেমনি বাড়ায় মাংসপেশির দৃঢ়তা। ব্যায়াম যোজায় সুঠাম ভঙ্গিমা এবং নিঃশ্বাসের প্রাচুর্য্য, যাতে করে শুদ্ধভাবে কথা বলা সম্ভব হয়।
* গলা চড়িয়ে কথা বললে স্বরযন্ত্রে অহেতুক চাপ পড়ে। সুযোগ থাকলে মাইক্রোফোনে আপনার কথাগুলো বলুন।
লেখক : অধ্যাপক, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন