ডা. মো. আবু সাঈদ, বিভাগীয় প্রধান, নিউরো সার্জারি বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: সমকাল
শরীরের যে কোনো টিস্যুর অস্বাভাবিক
বৃদ্ধিকে টিউমার বলা হয়। মস্তিস্কের টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্রেইন
টিউমার বা মস্তিস্কের টিউমার বলে। বিনাইন টিউমার অপেক্ষাকৃত ভালো। সঠিক
সময়ে সঠিক চিকিৎসা করালে এটি পুরোপুরি নির্মূল সম্ভব। মেলিগন্যান্ট টিউমার
খারাপ প্রকৃতির। এটাকেই বলে ব্রেইন বা মস্তিস্কের ক্যান্সার। সব ব্রেইন
টিউমার খারাপ প্রকৃতির বা ক্যান্সার না হলেও অবস্থানগত কারণে এর চিকিৎসা
দ্রুত ও জরুরি হয়ে পড়ে। অধিকাংশ টিউমারের উৎপত্তি মস্তিস্কে হলেও বেশকিছু
টিউমার শরীরে অন্যত্র থেকে মস্তিস্কে দানা বাঁধে। যে কোনো বয়সের নারী-পুরুষ
এ টিউমারে আক্রান্ত হতে পারেন।
লক্ষণ:
অস্বাভাবিক মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি, চোখের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে
কমে যাওয়া ও খিঁচুনি মস্তিস্কে টিউমার হওয়ার লক্ষণ। মাথাব্যথার সঙ্গে যদি
দ্রুত চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে থাকে বা বিনা কারণে কেউ যদি খিঁচুনি দিয়ে
অজ্ঞান হয়ে পড়ে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা:
মাথাব্যথাসহ চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই সবাই
চোখের চিকিৎসকের শরণাপম্ন হন। যদি ঘনঘন চশমার পাওয়ার বাড়াতে হয় বা
মাথাব্যথা না কমে তাহলে নিউরোসার্জনদের শরণাপম্ন হওয়া উচিত। মস্তিস্কের
ক্যান্সার নির্ণয়ে সিটিস্ক্যান এবং এমআরআই বেশ ভূমিকা রাখে। তবে এমআরআই
সিটিস্ক্যানের চেয়ে বেশি নির্ভুল ও নিরাপদ।
দেশেই চিকিৎসা সম্ভব: সঠিক
রোগ নির্ণয় করতে দেরি হলে যে কোনো রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কিছুই করার
থাকে না। এসব রোগে আক্রান্ত রোগী এতই বিভ্রান্ত থাকেন যে, তাদের চিকিৎসার
সময়টি তারা অযথা নানা জনের অপ্রয়োজনীয় পরামর্শ পার করে দেন। অনেকেই জানেন
না যে, আমাদের দেশেও এখন ব্রেইন টিউমারের আধুনিক চিকিৎসা সম্ভব। অনেকে রোগ
শোনামাত্রই বিদেশে যেতে মনঃস্থ করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা, তথ্য ও টেলিযোগাযোগ
ব্যবস্থার সহজলভ্যতা ও রোগ নির্ণয় পদ্ধতির উম্নত ব্যবস্থার কারণে দেশেই
আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে আধুনিক সেবা দেওয়া সম্ভব
হচ্ছে। ঢাকাসহ বিভাগীয় মেডিকেল কলেজগুলোতে মস্তিস্কের টিউমারের চিকিৎসা বা
অপারেশন সফলভাবেই হচ্ছে নিয়মিত। ঢাকায় বঙ্গবল্পুব্দ শেখ মুজিব মেডিকেল
বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
মিটফোর্ড হাসপাতাল ছাড়াও অনেক বেসরকারি হাসপাতালে ব্রেইন টিউমারের চিকিৎসা
হচ্ছে। মনে রাখবেন, সব ব্রেইন টিউমার কিন্তু দুরারোগ্য নয়। বিনাইন টিউমার
সল্ফপূর্ণ নিরাময়যোগ্য। মেলিগন্যান্ট টিউমারগুলো অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা
করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অনেক দিন পর্যন্ত সুস্থ বা কর্মক্ষম করা যায়।
সূত্র: সমকাল
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন