ছবি: ফিরোজ আহমেদ |
সিলেটের
নামের সঙ্গে সিগনেচার হিসেবে থাকে চা-বাগানের ছবি। সিলেট আন্তর্জাতিক
স্টেডিয়ামটি পড়েছে সেই চা-বাগানেরই মাঝখানে। বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে এগিয়ে
গেলে লাক্কাতুরা চা বাগানের মন ভরানো সৌন্দর্য। দেশের ক্রিকেটাররা অনেকবারই
এখানে খেলতে এসেছেন, তবু সিলেট এলে মুগ্ধ হন বারবারই। বিদেশি
ক্রিকেটারদেরও স্পর্শ করেছেন সিলেট মাঠের সৌন্দর্য।
মাঠের এক
পাশে দেশের একমাত্র গ্রিন গ্যালারি তো আছেই। চারপাশেই আছে ছোটখাটো টিলা।
নতুন বানানো পূর্ব গ্যালারীর দোতলাও নজর কাড়ে সবার। সিলেট
স্টেডিয়ামে খেলোয়াড়দের ব্যবহারের জন্য আছে চারটি ড্রেসিং রুম। প্রেসিডেন্সি
বক্সের ছাদও চোখে শান্তির পরশ বুলিয়ে দেওয়ার মতো।
রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির দেশে চোখ জুড়ানো ক্রিকেট মাঠের
অভাব নেই। সেই স্যামিকে জিজ্ঞেস করতে বললেন-‘ওয়ান্ডারফুল ভেন্যু’। সিলেটে
আগেও খেলেছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা। তবু নতুন করে
মুগ্ধতা তার কণ্ঠে, ‘সিলেটে তিন-চার বছর আগে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট
খেলেছিলাম। এবারও খুব ভালো লাগছে। গ্যালারি ও ড্রেসিং রুম যেমন দেখলাম, এটা
আন্তর্জাতিক মানের। আগেরবারের থেকে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। দর্শকদের
গ্যালারি অনেক ভালো হয়েছে। এ ছাড়া এখানে চারটা ড্রেসিং রুম আছে। মাঠটা
দেখতেও দারুণ। আমাদের এই মাঠ আসলে আন্তর্জাতিক মানের।”
সাকিব আল হাসানের তো সিলেটের ভেন্যুকে মনে হয় বিদেশের কোন মাঠ, ‘সিলেট সবসময়ই আমার প্রিয় ভেন্যুর মধ্যে একটি। কারণ পারিপার্শ্বিকতা মিলিয়ে জায়গাটি সুন্দর। ঘোরার মতো জায়গা আছে। সুন্দর হোটেল আছে। স্টেডিয়ামটা দেখতেও বিদেশি স্টেডিয়ামের মতো। যেটা আমার কাছে মনে হয় আমাদের দেশের জন্য অনন্য। সব মিলিয়ে খুব ভাল পরিবেশ।’
খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অনুভূতিও একইরকম, 'মাঠ খুবই ভালো লাগছে। এখানে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হয়েছিল। তখনকার চেয়ে এখন সুন্দর লাগছে গ্যালারিটা। আশা করি, উইকেটও ভালো হবে; এখানে অনেক দর্শক আসবে। এখানে আমরা দুটি ম্যাচ খেলব, আশা করি, সুখস্মৃতি নিয়েই ঢাকায় ফিরতে পারব।'
স্থানীয়রা এক সময় ‘গলফের মাঠ’ হিসেবে চিনতেন এই মাঠকে। পরে জায়গাটি সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামের জন্য বরাদ্দ করা হয়। ২০১১ বিশ্বকাপ উপলক্ষে পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়ামের রূপ পায়। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোয়ালিফাং রাউন্ড ও মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খেলা এখানেই হয়েছিল। সেই থেকে নামের সঙ্গে জুটেছে‘আন্তর্জাতিক’ তকমা। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচের আমেজ বলতে যা তা বরং এই ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি আসর দিয়েই পাচ্ছে সিলেট ভেন্যু। কারণ একসঙ্গে এত তারকার মেলা আর কখনো বসেনি এখানে। বিপিএলের খেলা দেখতে সিলেটে রীতিমতো উৎসবের আমেজ। টিকেটের জন্য রাতভর লাইনে দাঁড়িয়েছেন এখানকার দর্শকরা, খেয়েছেন পুলিশের পিটুনি। তবু দমেনি উৎসাহ। সিলেটের বাতাসে বইছে বিপিএল আমেজ।
শনিবার
সিলেটে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এর পঞ্চম আসর। শুরুর
দিন দুপুরে প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্স ও ঢাকা
ডায়নামাইটস। সন্ধ্যার ম্যাচে মাশরাফির রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে খেলবে
ড্যারেন স্যামির রাজশাহী কিংস।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন